এমপির নির্দেশেও বন্ধ হচ্ছে না পুকুর খনন

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এমপির নির্দেশেও বন্ধ হচ্ছে না পুকুর খননের মহোৎসব।  

স্থানীয়রা বলছেন, পুকুর খননে একদিকে কমছে ফসলি জমি, অন্যদিকে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। খাল, নদী দখল করে পুকুর খনন করায় পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হচ্ছে। সরিষার আবাদ নেমে এসেছে শূন্যের কোঠায়। হুমকির মুখে মধু আহরণ।  

স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, বাড়তি ফসল হিসেবে গত মৌসুমে ৭ হাজার ৭ শ মেট্রিক টন সরিষা পেয়েছিল কৃষক। যার মূল্য প্রায় ২৭ কোটি টাকা। 

ধানের দাম কম হওয়ায়, উৎপাদন খরচ তুলতে না পেরে পুকুর খননের দিকে ঝুঁকে পড়ছে কৃষক। নিচু জমিতে পুকুর খনন করে মাছ চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় গণহারে চলছে পুকুর খননের প্রতিযোগিতা। সরকারি অনুমতি ছাড়াই প্রতি বছর পুকুর খনন অব্যাহত রয়েছে। 

১ দশকে এ উপজেলায় পুকুর খননের ফলে প্রায় ৫শ হেক্টর কৃষি জমি কমেছে। এতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাড়াশ উপজেলায় ৫১৫টি পুকুর খনন করা হয়। এ পুকুর খননের ফলে ৩১৫ হেক্টর আবাদি জমি কমে গেছে। চলতি বছরে তিন শতাধিক পুকুর খনন কাজ চলমান থাকলেও প্রশাসন নির্বিকার। 

উপজেলার পুকুর খননকারী চক্রের হোতারা প্রতিটা পুকুর খননের জন্য জমির মালিকদের কাছ থেকে প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নেন।  

তাড়াশ থানার ওসি মো. মাহবুবুল আলম বলেন, সদ্য যোগদান করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, বেপরোয়া হারে পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েকটি খনন কাজ বন্ধও করে দেয়া হয়েছে।  

ডিসি ড. ফারুক আহম্মেদ বলেন, চলনবিল অঞ্চলে পুকুর খননের আলাদা নীতিমালা জরুরি। নিচু জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে কৃষক পুকুর খনন করে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রশাসন বাধা দিয়েও বিশেষ কিছু করতে পারছে না। 

সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ বলেন, পুকুর খনন বন্ধে এরইমধ্যে তিনটি সমন্বয় সভায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।