খাবার সামনে এলে নবীজির (সা.) দোয়া ও এর মর্মার্থ
দৈনিক চাঁদপুর
প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৯
হাদিস শরিফে এসেছে, যখন কোনো খাদ্যদ্রব্য নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালামের সামনে পরিবেশন করা হত, তখন তিনি এই দোয়া করতেন,
الحمدلله الذى رزقنيه من غيرحول منى ولا قوةٍ
‘সমস্ত প্রশংসা আলাহ তায়ালার যিনি আমাকে আমার শক্তি সামর্থ্য ছাড়াই রিজিক দিয়েছেন।’ (তিরমিযী, আবুদাউদ, ইবনে মাজাহ, আহমদ)।
আরো দেখুন>>> হারাম পশু পাখি খাওয়ার বিধান
এই দোয়ার মধ্যে আছে এ কথার সহজ স্বীকারোক্তি যে আমার এমন কোনো শক্তি সামর্থ্য ছিল না, যার ফলে আমি এই রিজিক পেয়েছি। বরং আমার শক্তি সামর্থ্য ছাড়াই আল্লাহ তায়ালা আমাকে এই রিজিক দান করেছেন, সুতরাং সুন্নত হলো যখন-ই কোনো খানা সামনে আসবে এই দোয়া পড়বে।
মুসলিম অমুসলিমের মাঝে পার্থ্যক্যকারী বাক্য:
গভীর ভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে এই দোয়াটি একজন মুসলমানকে কাফের থেকে এবং একজন আল্লাহ ওয়ালাকে দ্বীন ধর্মের প্রতি উদাসীন ব্যক্তি থেকে আলাদা করে দিচ্ছে। একারণেই কোনো মুসলমানের সামনে খানা এলে সে বিনয়ের সঙ্গে স্বীকার করে, এই খানা আমার বাহুবলে অর্জিত হয়নি, এ খানা বরং আল্লাহ তায়ালার দান, আমার শক্তি সামর্থ্য ছাড়াই তিনি আমাকে এই খানা দান করেছেন।
অন্যদিকে একজন কাফের ও অমুসলিম চিন্তা করে এই খানা আমার রক্ত ঘামের ফসল, তারা বলে আমি শ্রম দিয়েছি, মেধা খাটিয়েছি, ব্যবসা করেছি, চাষাবাদ করেছি, এসবের ফলে আমার হাতে টাকা পয়সা এসেছে, এর পর এই টাকা দিয়ে প্রয়োজনীয় অন্ন বস্ত্র ক্রয় করছি। এইখানে আল্লাহ তায়ালার কোনো দখল নাই, নাউযুবিল্লাহ!
কারুনের দাবি:
কোরআনুল কারিমের কারুনের আলোচনা এসেছে। সে ছিল অনেক অনেক সম্পদের মালিক। তার সম্পদ সংরক্ষনের জন্য ছিল অসংখ্য কোষাগার। সেই সব কোষাগারের চাবি বহন করার জন্য ছিল একটি বড় দল। কয়েকজনের পক্ষে তা বহন করা সম্ভব ছিল না। চিন্তা করুন আলাহ তায়ালা কী পরিমান সম্পদ দিয়েছিলেন কিন্তু যখন অঢেল ধন সম্পদের কারণে তার মাথায় দম্ভ অহংকার চেপে বসল এবং ভাবতে লাগল আমিই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনী এবং আমিই সবার সেরা তখন তাকে বলা হলো এই সব সম্পদ একমাত্র আল্লাহ তায়ালার দান। অতএব, তুমি দরিদ্রজনের প্রতি খেয়াল রাখ এবং সেই সম্পদ থেকে তাদেরকেও কিছু দাও। সে তখন জবাব দিল,
انماأوتيته على علم عندى
আমার সকল সম্পদ আমার জ্ঞান বুদ্ধির ফসল, (সূরা: কাসাস, আয়াত: ৭৮)।
কীভাবে টাকা উপার্জন করতে হয় আমি সেই জ্ঞান অর্জন করেছি, এবং সেই মোতাবেক চেষ্টা মেহনত করেছি। আমার সেই মেধা ও মেহনতে ফসল এই বিপুল সংখ্যাক কোষাগার। অতএব, এই বিশাল সম্পদ ভান্ডার আমার বিদ্যা বুদ্ধি ও চেষ্টা শ্রমের ফসল। অবশ্যই কারুর দান না। এ ছিল কারুনের চিন্তা ধারা, একজন ধনকুবের কাফেরের দৃষ্টিভঙ্গি ও মানসিকতা।
কারুনের পরিনাম:
তার এই দাম্ভিকতার ফল কী দাঁড়িয়েছিল? একবার সে তার সকল ধনসম্পদ ও সৈন্য সামন্ত সঙ্গে নিয়ে বের হলো, লোকজন তার ধনভান্ডা দেখে বলতে লাগল,
يليت لنامثل مااوتى قارون إنه لذوحظ عظيم
ইস কারুনের সম্পদ প্রাচুর্যের মতো আমাদেরও যদি থাকত। সে কত সৌভাগ্যবান। (সূরা: কাসাস, আয়াত: ৭৯)। কিন্তু এর কিছুক্ষন পরই আল্লাহ তায়ালা তার ওপর আজাব প্রেরন করলেন। আজাবের কারণে পৃথিবীতে এক মহা কম্পন শুরু হয়, সঙ্গে সঙ্গে কারুন ও তার সমস্ত সম্পদ ভূগর্ভে ধসে পড়ে এবং সবকিছু সহ কারুন ধ্বংস হয়ে যায়।
উপকরণ জোগাড় করা মানুষের কাজ:
মোট কথা, একজন কাফের বা অমুসলিমের চিন্তাধারা ও মানসিকতা হলো আমার সকল সম্পদ বিদ্যা ও শক্তির চমক, আমার চেষ্টা মেহতে ফসল। আমার জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ফসল, অন্যদিকে একজন মুসলমানের ভাষা হলো, যেসমস্ত সম্পদ আমার হাতে এসেছে, হে আল্লাহ এগুলো আপনার দান, আমার কোনো শক্তি সামর্থ্য ছাড়াই এইসম্পদ আমার হস্তগত হয়েছে, এ কারণেই কেউ যদি এ ব্যাপারে সামান্য গভীরে গিয়ে চিন্তা করে তা হলে দেখবে, মানুষের কাজ শুধু এতটুকুই যে সে উপকরণ জমা করার জন্য চেষ্টা কোশেষ করবে।
মানুষের কাজ হলো চোখ কান খোলা রেখে দোকান খুলে বসে পড়া, তবে সে কিন্তু দোকান খুলে বসার পড়ও যদি ক্রেতা না আসে তা হলে সে কী করবে? এই যে সে দোকান খুলল, হাত ব্যবহার করল, শক্তি ব্যয় করল, এগুলোও তাকে আল্লাহ তায়ালাই দান করেছেন। তিনি ইচ্ছা করলে এগুলো ছিনিয়ে নিতে পারতেন। সুস্থ ছিল বলেই দোকানে বসতে পেরেছিল, পা হাত সাভাবিক কাজ করেছিল। যদি অসুখ হত কিংবা হাত পা ভেঙ্গে যেত, বল শক্তি রহিত হয়ে যেত এমন অবস্থা কি তার দোকান খোলা আদৌ সম্ভব ছিল?
ক্রেতা কে পাঠান:
ধরে নিলাম দোকান খুলে বসা মানুষের কাজ, কিন্তু চিন্তা করুন দোকানে ক্রেতা পাঠানো কার কাজ? ক্রেতার অন্তরে কে ঢেলে দেন যে, অমুকের দোকান থেকে পণ্য ক্রয় কর? তারপর এই ক্রেতার মাধ্যমে উপার্জিত খোদ টাকা আদৌ কোনো খাদ্য না যা খেয়ে মানুষ ক্ষুধা নিবারন করবে কিংবা তা পান করে পিপাসা মিটাবে। এই টাকা দিয়ে নিত্য প্রয়োজনী জিনিস পত্র সংগ্রহ করা হয়। আর সব ধরনের নিত্যপন্য বাজারে পাওয়া যায়। এবার চিন্তা করুন কোন সে সত্তা যিনি বাজার ব্যবস্থা কায়েম করেছেন? কোন সে সত্তা যিনি মানুষের অন্তরে একথা ঢেলে দিয়েছেন যে যাও অমুক জায়গায় গিয়ে রুটির দোকান খুলে বস, আবার কারো অন্তরে ঢেলে দিয়েছেন, যে তুমি গিয়ে গোশতের দোকান দাও, তুমি খোল চিনি গুড়ের দোকান, আর তুমি খোল চাল গমের দোকান, তুমি গিয়ে কাপড়ের দোকান খুলে বস, তুমি খোল জুতার দোকান। কোন সে সত্তা যিনি পৃথিবীতে এমন সুন্দর শৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দিয়েছেন? কোথাও কি কোনো আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছিল যে, সেখানে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল অমুকে বিক্রি করবে আটা, অমুকে বিক্রি করবে চিনি, অমুকে করবে ঘি মাখনের ব্যবসা । আর অমুকে করবে তেলের কারবার?
টাকাই সবকিছু না:
আসলেই আল্লাহ তায়ালাই পৃথিবীর এমন সুশৃঙ্খল ভাবে সাজিয়েছেন, ফলে একজনের অন্তরে তেলের ব্যবসায়ের কথা ঢেলে দিয়েছেন, আরেকজনের অন্তরে ঢেলে দিয়েছেন চিনির ব্যবসায়ের কথা, আর একজন করছে ফলের ব্যবসা, আল্লাহ তায়ালার এই সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার ফলে মানুষ টাকা নিয়ে বাজারে গেলে তার প্রয়োজনীয় সকল নিত্যপন্য হাতের নাগালে পেয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা যদি পৃথিবীতে এই সুশৃঙ্খল ব্যবস্থনা কায়েম না করতেন, তা হলে মানুষ টাকা নিয়ে ঘুরতে থাকত, কিন্তু প্রয়োজন মত কোনো জিনিসই কাছে পেত না।
সবকিছুই আল্লাহর দান:
আমাদের সামনে যখন-ই কোনো খানা পরিবেশন করা হয়, আমরা আমাদের উদাসীনতার কারণে সাত পাঁচ না ভেবে সেই খানা খেতে শুরু করে দিই, অথচ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত হলো খানা পরিবেশন করার পর তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা। এই চিন্তা করা যে, এই খানা আমার বাহুর জোরে হাসিল হয়নি, তা বরং এক মহান সত্তার দান। আমার দেহে শক্তি ও সুস্থতা তিনিই দিয়েছেন, তার দেয়া শক্তিবলে আমি কামাই রোজগার করেছি এবং রুটি রুজি উপায় অবলম্বন করেছি, দোকান খুলে বসেছি, চাকুরি নিয়েছি, চাষবাশ করেছি। এসবের জন্য যেই শক্তির প্রয়োজন, তাও তার দান। তারপর এইসব উপায় উপকরণ গ্রহণ করার পর তাকে কার্যকর ও অব্যাহত রাখার কাজও আনজাম দিয়েছেন সেই মহান সত্তা, তিনিই আমার দোকানে গ্রাহক পাঠিয়েছেন, তিনি আমার অফিসারের অন্তরে আমাকে নিয়োগ দানের প্রয়োজনীয়তা ঢেলে দিয়েছেন। অন্যথায় আমার চেয়ে বড় বড় ডিগ্রি ধারী বহু লোক বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের চাকরি পাচ্ছে না, সুতরাং চাকরি দেয়া ও তার কাজ। চাকরি পাওয়ার পর আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব আনজাম দেয়ার শক্তি সামর্থ্যও তিনি দিয়েছেন। এরপর আল্লাহ তায়ালা চাকরি দানকারীর অন্তরে ঢেলে দিয়েছেন তাকে অতটাকা মাইনে দাও। বেতন পাওয়ার পর যখন হাতে টাকা হলো জিনিসপত্র কেনার সুযোগও তিনিই করে দিয়েছেন। মোট কথা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল কাজ তিনি আনজাম দেন, আমি অসিলা মাত্র। উল্লেখিত দোয়ার মর্মার্থ এটাই। দোয়াটি আবার উল্লেখ করছি,
الحمدلله الذى رزقنيه من غيرحول منى ولا قوةٍ
‘সমস্ত প্রশংসা আলাহ তায়ালার যিনি আমাকে আমার শক্তি সামর্থ্য ছাড়াই রিজিক দিয়েছেন।’
এ কারণেই নবীজি সালালাহু আলাইহি ওয়াসালাম খানা সামনে এলে এই দোয়া পড়তেন।
- মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা
- মদ খেয়ে নারী নিয়ে হোটেলে নোবেল, গভীর রাতে চেঁচামেচি
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকাডুবির ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ৫
- দেশের অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নকে বাঁচিয়ে রাখতে শেখ হাসিনার পাশে থাকতে
- ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ক্রোয়েশিয়া
- দেশে করোনায় ৮২ পুলিশ সদস্যের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৮ হাজার
- মোংলা বন্দরের নতুন চ্যানেল নির্মাণ সম্পন্ন
- আয়কর দিতে হবে ৩০ তারিখের মধ্যে
- গ্রামীণ বিদ্যুৎ সুবিধা উন্নয়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
- দেশের নানা আয়োজনে ১৭-২৬ মার্চ যোগ দেবেন বিশ্ব নেতারা
- স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা
- কর্মস্থল ত্যাগকারীদের তালিকা চায় মন্ত্রণালয়
- ‘মধ্যবিত্তদেরও খাদ্য সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে’
- আজ থেকে চালু হচ্ছে মালবাহী ট্রেন
- চালু হলো দেশের প্রথম বেসরকারি আরটি পিসিআর ল্যাব
- করোনার আতঙ্কেও এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ
- উৎপাদন বৃদ্ধিতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার
- করোনাকালে চূড়ান্ত এমপিওভুক্তির সুখবর পেল ১৬৩৩ স্কুল-কলেজ
- হাওরে প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার শ্রমিক ধান কাটছেন: কৃষিমন্ত্রী
- ময়মনসিংহে করোনা রোগীদের জন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫টি অ্যাম্বুলেন্স
- করোনা মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুর স্বাস্থ্যসেবা দর্শন
- বৈশ্বিক ক্রয়াদেশ পূরণে সক্ষম বাংলাদেশ ॥ শেখ হাসিনা
- মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে মানুষ, দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে
- করোনা পরীক্ষা হবে চার বেসরকারি হাসপাতালে
- ২০ হাজারের বেশি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত রয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- সুখবর আসছে ব্যাংক সুদে
- গুগল ম্যাপের বিকল্প আনলো হুয়াওয়ে
- অভিনেতা ইরফান খান মারা গেছেন
- ঘরে থাকা সাত জিনিস ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর
- ফ্রিজে ২৮ দিন বাঁচে সার্স-কভ ভাইরাস! জীবাণুমুক্ত করার উপায়