করোনা-আতঙ্কে বিক্রি কমছে, দুশ্চিন্তা বাড়ছে
দৈনিক চাঁদপুর
প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২০
আর পাঁচটা দিনের মতোই দোকান খুলে বসে ছিলেন রাজধানীর শেওড়াপাড়ার ইনসোল নামের একটি জুতার দোকানের ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম। কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে গেলে তিনি বলেন, তিন-চার দিন ধরে এই অবস্থা চলছে। মঙ্গলবার ছুটির দিন থাকায় বেশি বিক্রির আশা ছিল। কিন্তু সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মনে হয় ২৫ জন ক্রেতাও দোকানে ঢোকেননি।
আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্কে মানুষ বাইরে বের হচ্ছে কম। এখন সবাই চাল-ডাল কিনছেন। জুতা কেনা তো জরুরি নয়।
আমিনুলের কথার প্রমাণ পাওয়া গেল কিছু দূরের কাঁচাবাজারে গিয়ে। মুদিদোকানি মো. শাহ আলম জানান, চালের বস্তা নামাতে নামাতে তাঁর শরীর ব্যথা হয়ে গেছে। বিক্রি অনেক হয়েছে। তবে আগামী দেড়-দুই মাস ক্রেতা তেমন মিলবে না বলেই তাঁর আশঙ্কা। এখন যাঁরা বাড়তি কিনেছেন, তাঁদের তো কিছুদিন চালের প্রয়োজন হবে না।
এ তো গেল রাস্তার পাশের দোকানের কথা। ঢাকার বড় কেনাকাটার জায়গা পান্থপথের বসুন্ধরা সিটিতে গতকাল বলতে গেলে তেমন কোনো ক্রেতা ছিল না। দোকানগুলো ছিল প্রায় ফাঁকা। একটি পণ্যের সঙ্গে আরেকটি বিনা মূল্যে দেওয়ার অফারও ক্রেতাদের তেমন আকৃষ্ট করতে পারেনি।
রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে জানা যায়, গত তিন-চার দিনে ইলেকট্রনিক পণ্য, মুঠোফোন, পোশাক, জুতা ও চামড়াজাত পণ্য, গয়না, আসবাব, তৈজসপত্র ইত্যাদি পণ্যের বিক্রি কমে গেছে। রেস্তোরাঁগুলোতেও ক্রেতার উপস্থিতি কম। বিয়ে ও অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান কমেছে। বিউটি পারলারে নারীরা ভিড় করছেন না। কাঁচাবাজার ছাড়া মোটামুটি সব জায়গায় বেচাকেনায় মন্দাভাব।
পোশাকের ব্র্যান্ড জেন্টল পার্কের বসুন্ধরা সিটির একটি বিক্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আবদুর রাজ্জাক জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিক্রি ৫০ শতাংশ কমেছে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন যেখানে এক থেকে দেড় লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হতো। এখন তা কমে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় নেমেছে।
জানতে চাইলে দেশের বাজারে জুতার শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড বাটার রিটেইল সেল বা খুচরা বিক্রি বিভাগের প্রধান আরফানুল হক বলেন, ‘দেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর আমাদের বিক্রি ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমেছে। আর দেশজুড়ে থাকা বাটার নিজস্ব ২৬৩টি বিক্রয়কেন্দ্রে ক্রেতা উপস্থিতি কমেছে ৩৫ শতাংশের বেশি।’ তিনি আরও বলেন, স্বাভাবিক সময়ে দেশজুড়ে সব বিক্রয়কেন্দ্রে দিনে গড়ে ২ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হতো। করোনার প্রভাবে এখন বিক্রির পরিমাণ কমে দেড় কোটি টাকায় নেমেছে।
রেফ্রিজারেটর, মুঠোফোন, শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রসহ (এসি) গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য সরঞ্জামের উৎপাদনকারী ও বিক্রেতা ফেয়ার ইলেকট্রনিকসের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দীন বলেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত কয়েক দিনে বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ কম হয়েছে। কারণ যে করোনাভাইরাস, বলার অপেক্ষা রাখে না।
মেসবাহ উদ্দীন আরও বলেন, মানুষ ঘর থেকে বের না হলে বিক্রি কম হবে, সেটা স্বাভাবিক। এর প্রভাব কী হয়, তা বুঝতে আরও সময় লাগবে।
যখন বাজারে পণ্যের চাহিদা থাকে, তখন অর্থনীতি সচল থাকে। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী পণ্যের চাহিদায় ধস নামায় বাংলাদেশের রপ্তানি খাত ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে। দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স নিয়েও। প্রবাসী আয় কমলে অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা আরও কমার আশঙ্কা থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাবে, গতকাল বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত বিশ্বের ১৫৯টি দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৫ জন। ইতিমধ্যে মারা গেছেন ৭ হাজার ৫২৯ জন। বাংলাদেশে গতকাল প্রথমবারের মতো একজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে সরকার। আক্রান্ত মোট ১৪ জন।
মানুষ নিত্যপণ্য কিনছে ঠিকই। কিন্তু কমে গেছে ইলেকট্রনিকস, পোশাক, জুতা, আসবাব ইত্যাদির বিক্রি। সব মিলিয়ে চাহিদায় ভাটা।
স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর’স গ্লোবাল (এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল) গতকাল বলেছে, করোনা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিয়েছে। যতটুকু আঘাতের আশঙ্কা করা হয়েছিল, মাত্রা তার চেয়ে বেশি।
অবশ্য দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারমুখী শিল্প খাত বলছে, এখনো প্রভাব মাপার মতো অবস্থা হয়নি। করোনা পরিস্থিতি কত দূর যায়, সেটার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। যদি এটি স্বল্পকালীন হয়, তাহলে শেষ পর্যন্ত প্রভাব ততটা পড়বে না। আবার যদি দীর্ঘমেয়াদি, অর্থাৎ কয়েক মাস থাকে, তাহলে সেটা বড় চিন্তার বিষয়। এখন বিক্রি কিছুটা কম হলেও আগামী পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার কেনাবেচা নিয়ে আশাবাদী তারা।
নানা ধরনের পণ্যের ব্যবসা করে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির বিপণন পরিচালক প্রথম আলোকে বলেন, এখনো তেমন কোনো প্রভাব নেই। প্রভাব বুঝতে কিছু সময় লাগবে।
উদ্বেগের বিষয় হলো, গত ২০১৯ সালের দ্বিতীয় ভাগে সিমেন্ট, ইস্পাত, পাদুকাসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসা করতে পারেননি। এরপর নতুন ধাক্কা এল করোনা। তা-ও এমন সময়ে এল, যখন পোশাক ও পাদুকা ব্যবসায়ীরা শীতকালীন আয়োজন শেষ করে গ্রীষ্মের বাজার ধরতে দোকানে পণ্য উঠিয়েছেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, করোনা–আতঙ্কে মানুষ বাইরে বের কম হলে সরাসরি বিক্রি কমার আশঙ্কা থাকে। আবার নিত্যপণ্য কিনতে বাড়তি ব্যয়, স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে তার জন্য অর্থ রাখা এবং আয় কমার ঝুঁকির কারণে ব্যয় কমিয়ে দেওয়া—এসব কারণেও চাহিদা কমতে পারে। এসব আবার সেবা খাতের প্রবৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলে। জিডিপির বড় অংশ আসে সেবা খাত থেকে।
- মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা
- মদ খেয়ে নারী নিয়ে হোটেলে নোবেল, গভীর রাতে চেঁচামেচি
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকাডুবির ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ৫
- দেশের অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নকে বাঁচিয়ে রাখতে শেখ হাসিনার পাশে থাকতে
- ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ক্রোয়েশিয়া
- দেশে করোনায় ৮২ পুলিশ সদস্যের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৮ হাজার
- মোংলা বন্দরের নতুন চ্যানেল নির্মাণ সম্পন্ন
- আয়কর দিতে হবে ৩০ তারিখের মধ্যে
- গ্রামীণ বিদ্যুৎ সুবিধা উন্নয়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
- দেশের নানা আয়োজনে ১৭-২৬ মার্চ যোগ দেবেন বিশ্ব নেতারা
- স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা
- কর্মস্থল ত্যাগকারীদের তালিকা চায় মন্ত্রণালয়
- ‘মধ্যবিত্তদেরও খাদ্য সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে’
- আজ থেকে চালু হচ্ছে মালবাহী ট্রেন
- চালু হলো দেশের প্রথম বেসরকারি আরটি পিসিআর ল্যাব
- করোনার আতঙ্কেও এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ
- উৎপাদন বৃদ্ধিতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার
- করোনাকালে চূড়ান্ত এমপিওভুক্তির সুখবর পেল ১৬৩৩ স্কুল-কলেজ
- হাওরে প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার শ্রমিক ধান কাটছেন: কৃষিমন্ত্রী
- ময়মনসিংহে করোনা রোগীদের জন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫টি অ্যাম্বুলেন্স
- করোনা মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুর স্বাস্থ্যসেবা দর্শন
- বৈশ্বিক ক্রয়াদেশ পূরণে সক্ষম বাংলাদেশ ॥ শেখ হাসিনা
- মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে মানুষ, দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে
- করোনা পরীক্ষা হবে চার বেসরকারি হাসপাতালে
- ২০ হাজারের বেশি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত রয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- সুখবর আসছে ব্যাংক সুদে
- গুগল ম্যাপের বিকল্প আনলো হুয়াওয়ে
- অভিনেতা ইরফান খান মারা গেছেন
- ঘরে থাকা সাত জিনিস ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর
- ফ্রিজে ২৮ দিন বাঁচে সার্স-কভ ভাইরাস! জীবাণুমুক্ত করার উপায়