কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন আসলে কী?
দৈনিক চাঁদপুর
প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২০
করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে বিশ্বব্যাপী মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বাংলাদেশেও সবাই ভীত এই সংক্রামক রোগ নিয়ে। একই সঙ্গে কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেশনের মতো শব্দগুলো ঘুরপাক খাচ্ছে মুখে মুখে। এগুলো আসলে কী? করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই সময়ে করণীয় নিয়ে এবারের প্রতিবেদন।
যেকোনো সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন ঠিকমতো ব্যবস্থাপনা করা গেলে বা মেনে চললে সহজেই সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধ করা সম্ভব। এই ব্যবস্থা ফলপ্রসূ করতে হলে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
কোয়ারেন্টিন হলো কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে ছিল বা ব্যাপক ছড়িয়ে পড়া সংক্রামক রোগের এলাকা থেকে এসেছে, কিন্তু পরীক্ষায় সেই সংক্রামক রোগের লক্ষণ বা জীবাণু তার শরীরে পাওয়া যাচ্ছে না। আর আইসোলেশন হলো তার শরীরে জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই দুই দলকেই অন্যান্য সুস্থ মানুষের সংস্পর্শ থেকে আলাদা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় হলো ১৪ দিন। তবে ভিন্নমতও আছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, আরও কিছুদিন বেশি হতে পারে। এই ১৪ দিনে যদি সেই ব্যক্তির শরীরে রোগের উপসর্গ বা জীবাণু না পাওয়া যায়, তাহলে তার কোয়ারেন্টিন শেষ বলে ধরা হবে, কিন্তু ১৪ দিনের মধ্যে জীবাণু পাওয়া গেলে সেই ব্যক্তিকে আলাদা রাখতে হবে। আর আলাদা রাখার এই ব্যবস্থাপনাকে আইসোলেশন সময় বলা হবে। রোগ থেকে সম্পূর্ণ ভালো বা জীবাণুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত বা চিকিৎসকের পরামর্শে আইসলেশনের মেয়াদকাল নির্ধারিত হবে।
ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র রায় বলেন, কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা সন্দেহে থাকা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। যার অথবা যাদের কোনো শারীরিক উপসর্গ নেই, তাদেরও ১৪ দিন স্বেচ্ছা বা হোম কোয়ারেন্টিন পালন বাধ্যতামূলক। কারণ, এই সময়ের মধ্যে যেকোনো সময় উপসর্গ বা জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া যেতে পারে।
হোম কোয়ারেন্টিনে কীভাবে থাকবেন
বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা এবং আলো–বাতাসের সুব্যবস্থা আছে, এমন আলাদা একটি ঘরে থাকতে হবে। কোনোভাবে তা সম্ভব নাহলে অন্যদের থেকে অন্তত ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
● ঘুমানোর জন্য আলাদা বিছানা ব্যবহার করতে হবে।
● যদি সম্ভব হয়, তাহলে আলাদা গোসলখানা ও টয়লেট ব্যবহার করতে হবে।
● শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর আগে মাকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
● কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে কোনো পোষা প্রাণী (পাখিও) রাখা যাবে না।
● বাড়ির অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে একই ঘরে থাকার সময় বা ১ মিটারের মধ্যে এলে ও জরুরি দরকারে বাড়ি থেকে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাস্কে সর্দি, থুতু, কাশি, বমি ইত্যাদি লাগলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি পাল্টে নতুন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
● ব্যবহার করা মাস্ক ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিন বা ময়লা রাখার পাত্রে ফেলতে হবে।
হাত ধোয়া
কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে নিয়মিত। প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
মুখ ঢেকে হাঁচি–কাশি দিতে হবে
কাশির সময় শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে। হাঁচি–কাশির সময় টিস্যু, মাস্কে কিংবা বাহুর ভাঁজে মুখ ও নাক ঢেকে রাখতে হবে এবং ওপরের নিয়ম অনুযায়ী হাত পরিষ্কার করতে হবে।
● টিস্যু ও মেডিকেল মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।
● ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা যাবে না।
● বাসনপত্র—থালা, গ্লাস, কাপ ইত্যাদি; তোয়ালে ও বিছানার চাদর অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা যাবে না। এসব জিনিস ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
কখন কোয়ারেন্টিন শেষ হবে?
বিভিন্ন সংক্রামক রোগের কোয়ারেন্টিনের সময়সীমা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তবে এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা ১৪ দিন।
কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় যা করা যেতে পারে
● পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে টেলিফোন, মোবাইল বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা যেতে পারে।
● শিশুকে পর্যাপ্ত খেলার সামগ্রী দেওয়া যেতে পারে এবং খেলার পর খেলনাগুলো জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
● দৈনন্দিন রুটিন, যেমন খাওয়া, হালকা ব্যায়াম ইত্যাদি মেনে চলতে হবে।
● সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিসের কাজ করা যেতে পারে।
● বইপড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা অথবা নিয়মের পরিপন্থী নয়, এমন যেকোনো বিনোদনমূলক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা যেতে পারে।
পরিবারের সদস্যদের জন্য
বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং যাঁর দীর্ঘমেয়াদি রোগগুলো, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, অ্যাজমা প্রভৃতি নেই, এমন একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়োজিত করতে হবে। তিনি ওই ঘরে বা পাশের ঘরে থাকবেন, অবস্থান বদল করবেন না।
কোয়ারেন্টিনে আছে এমন কারও সঙ্গে কোনো অতিথিকে দেখা করতে দেওয়া যাবে না।
পরিচর্যাকারীর কী করণীয়
নিয়মিত হাত পরিষ্কার করবেন। বিশেষ করে কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, খাবার তৈরির আগে ও পরে, খাওয়ার আগে, গ্লাভস বা হাতমোজা পরার আগে ও খোলার পরে, যখনই হাত দেখে নোংরা মনে হয়, খালি হাতে ও ঘরের কোনো কিছু স্পর্শ করবেন না।
কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির পরিচর্যায় ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, টিস্যু ইত্যাদি অথবা অন্য আবর্জনা ওই ঘরে ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে রাখতে হবে। এসব আবর্জনা খোলা জায়গায় না ফেলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
ঘরের মেঝে, আসবাব, টয়লেট ও বাথরুম প্রতিদিন অন্তত একবার পরিষ্কার করতে হবে। ব্লিচিং পাউডার পানিতে মিশিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলতে হবে। কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিকে নিজের কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালেসহ ব্যবহৃত কাপড় গুঁড়া সাবান বা কাপড় কাচার সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে বলুন এবং শুকিয়ে ফেলুন।
উপসর্গ দেখা দিলে
যদি কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, যেমন জ্বর, কাশি–সর্দি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি, অতিদ্রুত রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) হটলাইনে অবশ্যই যোগাযোগ করুন এবং পরবর্তী করণীয় জেনে নিন।
হটলাইন নম্বর: ০১৯৪৪৩৩৩২২২, ০১৯২৭৭১১৭৮৪–৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৫৫০০৬৪৯০১–৫ এবং জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩।
- মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা
- মদ খেয়ে নারী নিয়ে হোটেলে নোবেল, গভীর রাতে চেঁচামেচি
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকাডুবির ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ৫
- দেশের অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নকে বাঁচিয়ে রাখতে শেখ হাসিনার পাশে থাকতে
- ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ক্রোয়েশিয়া
- দেশে করোনায় ৮২ পুলিশ সদস্যের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৮ হাজার
- মোংলা বন্দরের নতুন চ্যানেল নির্মাণ সম্পন্ন
- আয়কর দিতে হবে ৩০ তারিখের মধ্যে
- গ্রামীণ বিদ্যুৎ সুবিধা উন্নয়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
- দেশের নানা আয়োজনে ১৭-২৬ মার্চ যোগ দেবেন বিশ্ব নেতারা
- স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা
- কর্মস্থল ত্যাগকারীদের তালিকা চায় মন্ত্রণালয়
- ‘মধ্যবিত্তদেরও খাদ্য সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে’
- আজ থেকে চালু হচ্ছে মালবাহী ট্রেন
- চালু হলো দেশের প্রথম বেসরকারি আরটি পিসিআর ল্যাব
- করোনার আতঙ্কেও এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ
- উৎপাদন বৃদ্ধিতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার
- করোনাকালে চূড়ান্ত এমপিওভুক্তির সুখবর পেল ১৬৩৩ স্কুল-কলেজ
- হাওরে প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার শ্রমিক ধান কাটছেন: কৃষিমন্ত্রী
- ময়মনসিংহে করোনা রোগীদের জন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫টি অ্যাম্বুলেন্স
- করোনা মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুর স্বাস্থ্যসেবা দর্শন
- বৈশ্বিক ক্রয়াদেশ পূরণে সক্ষম বাংলাদেশ ॥ শেখ হাসিনা
- মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে মানুষ, দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে
- করোনা পরীক্ষা হবে চার বেসরকারি হাসপাতালে
- ২০ হাজারের বেশি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত রয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- সুখবর আসছে ব্যাংক সুদে
- গুগল ম্যাপের বিকল্প আনলো হুয়াওয়ে
- অভিনেতা ইরফান খান মারা গেছেন
- ঘরে থাকা সাত জিনিস ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর
- ফ্রিজে ২৮ দিন বাঁচে সার্স-কভ ভাইরাস! জীবাণুমুক্ত করার উপায়