ব্রেকিং:
দেশে করোনায় ৮২ পুলিশ সদস্যের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৮ হাজার আয়কর দিতে হবে ৩০ তারিখের মধ্যে গ্রামীণ বিদ্যুৎ সুবিধা উন্নয়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি দেশের নানা আয়োজনে ১৭-২৬ মার্চ যোগ দেবেন বিশ্ব নেতারা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা উৎপাদন বৃদ্ধিতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করোনাকালে চূড়ান্ত এমপিওভুক্তির সুখবর পেল ১৬৩৩ স্কুল-কলেজ করোনা মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুর স্বাস্থ্যসেবা দর্শন বৈশ্বিক ক্রয়াদেশ পূরণে সক্ষম বাংলাদেশ ॥ শেখ হাসিনা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে মানুষ, দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে করোনা পরীক্ষা হবে চার বেসরকারি হাসপাতালে ২০ হাজারের বেশি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত রয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনা আক্রান্তের শরীরের অক্সিজেনের পরিমাণ ঘরেই পরীক্ষার উপায় দেশে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত, আরো ৮ মৃত্যু করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রশংসা করলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে ৫৪৯ নতুন করোনা রোগী শনাক্ত, আরো ৩ মৃত্যু হাসপাতাল থেকে পালানো করোনা রোগীকে বাগান থেকে উদ্ধার চাঁদপুরে ২০০০ পরিবারের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ চীনের ৪ বিশেষজ্ঞ ঢাকায় আসছেন ভেন্টিলেটর-সিসিইউ স্থাপনে ১৪শ` কোটি টাকার জরুরি প্রকল্প
  • শনিবার ১১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৮ ১৪৩১

  • || ০২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সর্বশেষ:
একবছরে পাঁচগুণ মুনাফা বেড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আমাজন বাঁচাতে লিওনার্দোর ৫০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান ১৬২৬৩ ডায়াল করলেই মেসেজে প্রেসক্রিপশন পাঠাচ্ছেন ডাক্তার জোরশোরে চলছে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কাজ

জাতীয় ঐক্যের পেছনে রয়েছে ভয়ানক ড্রাগন

দৈনিক চাঁদপুর

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০১৮  

বিএনপি-কে দোষী বলা যায়না। যদি কারো দিকে আঙ্গুল তাক করতেই হয় তাহলে ডক্টর কামাল আর তার তথাকথিত জাতীয় ঐক্য’র পার্টনারদের দিকেই তাক করা উচিৎ। এই আপাদমস্তক এলিট এবং বৈশ্বিক স্বৈরশাসকদের গোলাম ডক্টর কামাল এখন তার প্রাচীন ব্যর্থ কিছু লুজারদের সাথে করে যে প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন সেটির নাম সাপের বিষ-কে হই হই করে মধু প্রমাণের প্রজেক্ট।

একজন ভাগ্যের নির্মম গ্রাসে হয়ে যাওয়া পতিতা যখন তার যৌবন হারান তখন তিনি বুঝতে পারেন যে তার দেহ আর বিক্রয়যোগ্য নহে। তিনি চলে যান লোকচক্ষুর একেবারে আড়ালে। কিন্তু একজন স্বেচ্ছায় হওয়া পতিতা তার বয়সও বুঝতে চান না, বুঝতে চান না সময় কতটা আছে।

আমাদের দূর্ভাগ্য এতই যে আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রস্টিটিউটগুলো নির্বাচন এলেই থালা হাতে বের হয়ে পড়েন। বয়স বা শরীরের কথা বেমালুম ভুলে যায়। লক্ষ্য একটাই থাকে নির্বাচন এসেছে ফলে এটি বেচে যদি দুটো পয়সা কামিয়ে নেয়া যায়।

জাতীয় ঐক্য নামের যে বদমাশীটা এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি এটি আসলে কোন ভাবেই কোনো জাতীয় ঐক্য হতে পারে না। তাদের দেওয়া এই ‘জাতীয় ঐক্য’ নামটির মধ্যেই সমস্যা রয়েছে বলে মনে হয়। কিছু টকশো জীবি, একটি গামছা ভাঁড় আর দুটো দুটো পতিত পলিটিকাল প্রস্টিটিউট দিয়ে জাতীয় ঐক্য কি আর হয়!

জাতীয় ঐক্য আলাদা জিনিস। কথা ছিলো জাতীয় ঐক্য হবে সকল পলিটিকাল কনসেপ্টের কমন একটা প্লাটফর্ম, যেখানে একটা হারমোনাইজড কনসেনসাস ফর্ম করবে, যেখানে জাতীয় ঐক্যমতের পরিপূর্ণ চর্চা হবে। সকল ভান্ডামী দূরে থাকবে।

অথচ এই জাতীয় ঐক্যের নাম করে জনাব কামাল সাহেব যেটিকে সামনে এনেছেন সেটি হচ্ছে একটা ভয়ানক ড্রাগনকে আড়াল করে কিছু ভেজা বিড়ালকে সামনে এনে দাঁড় করানো। আসলে এরা ভেজা বেড়ালও নয়। এরা হলো মিরকাট জাতীয় ছুঁচো প্রাণী। যে প্রানী আগুন লাগলে ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে এবং তখন মনে করে তারা চোখ বন্ধ করলেই আগুন নিভে যাবে।

বিএনপির গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সে দিন অপ্রত্যাশিত ভাবে কয়েকটি সঠিক কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, “মুখে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলে আর সোনার বাংলা গড়ার কথা বলে, বি এন পির রাজনীতি করা যাবে না”

গয়েশ্বর এই কথাটি যে কামাল সাহেবকে লক্ষ্য করে বলেছেন, তা বলাই বাহুল্য। অবশ্য কামাল সাহেবের কানে এটি গেছে কিনা আমার জানা নেই। গেলেই বা কি!

জানিনা উপরের এই বক্তব্য সঠিক কিনা। তবে যদি গয়েশ্বর যদি এটি নাও বলে থাকে তথাপিও বলা যেতে পারে যে, এটি বি এন পির তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে ওদের ডাগর জোয়ানদেরও ভাষ্য এটি।

এটার মানে দাঁড়াচ্ছে, কামাল আর কাদের সিদ্দিকী সাহেবরা ধানের শীষের উপরে বসে বসে বঙ্গবন্ধুর নামে তসবি জপবেন আর ছুরি বসাবেন হাসিনার পিঠে, এটির থেকে গয়েশ্বরের কথাটি বরং জাতীয়তাবাদী ঘরানা হিসেবে যথেষ্ঠ যৌক্তিক মনে হচ্ছে। ভাত খাবে খালেদার আর পিঠ চুলকাবে বঙ্গবন্ধুর, এটা কি আর হয়।

আপনি বিএনপির বিছুলি চাবাবেন আবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বয়ান কপচাবেন, একসাথে এই দুইটি যায়না।

মান্না-কাদের-রব-জাফর এরা কারা? বাংলাদেশের রাজনীতিতে এদের পোছে কে? এদের পেছনে জনতার ম্যান্ডেট গুনে গুনে কয়টি রয়েছে? ৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যদি কামাল সাহেবের মার্কাটা নৌকা না হতো তবে সেই ৫৬ লক্ষ ভোট আর তাঁকে পেতে হোতো না। ঠিক এর পরে গণ গাধা তথা গণ ফোরাম করে যেমন বার বার জামানত খুইয়েছেন তিনি, ঠিক তেমনটিই হতো।

কথায় কথায় সংবিধানের লেজটি ধরে কামাল নাড়তে থাকেন। পুরো কোর্টে কামাল তার মনোপলি গেম তৈরী করে রেখেছেন। যাকে সামনে দেখেন তাকেই তিনি ধমকে বলেন, সংবিধান চেন? যেন তিনি একটা সংবিধান মাস্তান কিংবা সংবিধান ম্যানিয়াক।

নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি, সবাইকে তিনি কোর্টে গেলে ধমকান। বাংলাদেশে কি কামাল-ই একমাত্র ব্যাক্তি যিনি আইন বোঝেন? তিনিই কি একমাত্র ব্যক্তি যিনি সংবিধান বোঝেন? এইতো সেদিন তিনি সূপ্রীম কোর্টে গিয়ে এটর্নী জেনারেলকে বাস্টার্ড বলে গালি দিলেন। কয়েক সপ্তাহ আগে নির্বাচন কমিশনারকে ঝাড়ি দিলেন। এই লোকটি এত স্পর্ধা পেলো কোথা থেকে? এর এই সাহসের উৎস বা স্থান কারা? আমেরিকা?

গত ১০টি বছর তার মেয়ের জামাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করবার জন্য সব রকমের চেষ্টা করেছে। তখন কোথায় ছিলেন তিনি?

এখন সে তার আরেক নতুন মিশন হিসেবে বিএনপি আর জামায়াতকে হালাল করবার মিশনে নেমেছেন। গলা উঁচু করে তিনি বলেন, জামাত এলে তিনি জাতীয় ঐক্য করবেন না। অথচ বি এন পি জামাতের সাথে একদিকে ঐক্য ঠিক রেখেছে আবার অন্যদিকে তাদের আরেক ঠ্যাং উঠিয়ে রেখেছে কামাল সাহেবের কপালে।

কামালের ব্যাপারটা হচ্ছে এমন যে, “আমি তো পতিতার ঘরে সরাসরি যাইনা, মান্নার দুয়ার দিয়ে যাই”। অবশ্য কামাল এইবার ঝেড়ে কেশেছেন। চোখের সব রকমের লজ্জা ফেলে রেখে ধানের শীষ তার মার্কা বলে মেনে নিয়েছেন। ভোটের মাঠে গন ফোরামের উদীয়মান সূর্য যে ডুবিয়মান সূর্য হিসেবে ডুবে যাবে এটা এই চালাক লোকটি ধরে ফেলেছে। এই খোলশ ফেলে সামনে আসার জন্য কামালকে এই ক্ষেত্রে একটা ধন্যবাদ দেয়া যেতেই পারে।

জাতীয় ঐক্যের পুরো ঘটনাটি একটু সরল চোখে দেখতে গেলে বলতে হয় একটা মানুষের পাছা চলে এসেছে সামনে, মুখ চলে গেছে পেছনে। অর্থ্যাৎ এই ঐক্যে বি এন পি কে যদি মূল মাথা ধরি আর কামাল গংদের পাছা ধরি তাহলে বলতেই হয় বি এন পি হচ্ছে পুরো গ্যাংটির মূল দল। যাদের রয়েছে কিছু একরোখা অনুসারী। এদের বাদ দিলে মান্না-কাদের-জাফর-রব কিংবা কামালদের সব মিলিয়ে গোটা বিশেক ভোট রয়েছে যদি এদের আত্মীয় স্বজন দয়া করে এদের ভোট দেয় অথবা পুশ সেলিং ভালো হয়। অর্থ্যাৎ কিছু পুশ সেলার দোকানদার চলে এসেছে সামনে আর মূল আড়ৎদার বসে রয়েছে পেছনের দিকে।

আজকের সুইং ভোটার তরুনেরা কি একবার ভেবে দেখবে যে কেন এই পাছা সামনে আর মাথা পেছনে করে মূল ড্রাগন লুকায়িত? তারা কি প্রশ্ন করবে জাতিকে? কেন বি এন পির মত এত বড় একটা দল আজকে পিছু হটতে হটতে কামাল-মান্নার পেছনে এসে লুকিয়েছে? যদি সেই প্রশ্ন তারা করে থাকে তবে, তারা শুধু সেখানে দেখবে হাওয়া ভবন, রক্ত, খুন, লুটপাট আর বঞ্চনার ইতিহাস।

জাতীয় ঐক্যের নামে যে তারেক রহমানীয় মোর্চা গঠিত হয়েছে এটি ইলেকশনে জিতলে প্রথমেই দুটো লাথি মেরে কামালকে ফেলে দেবে। এরপর লাথি খাবে মান্না, তারপর খাবে কাদের। রব আর জাফরের লাথি খাবার সুযোগ কম কেননা এই দুইটি সব সময় তরলের সাথে মিশে যেতে পারে। ভদ্র ভাষায় এদের চাটুকার বলা যেতে পারে। ফলে শেষ পর্যন্ত যেটি রয়ে যাবে সেটি হচ্ছে বি এন পি আর জামাতের পুনরায় শাসন। সেই একই প্রহসন।

গত ১০ বছরে বাংলাদেশ যে মূল্যবোধের চর্চা শিখেছে কিংবা আমরাও গত কিছুকাল যাবৎ যে বাংলাদেশের কথা বলেছি সেখানে বি এন পি কিংবা জামাতের স্থান হতে পারে না অথবা এদের পলিটিকাল কনসেপ্ট গ্রহন করবার জন্য দেশ প্রস্তুত নয়। জাতীয়তাবাদের সাম্প্রদায়িকতা আর ধর্মের নামে রাজনীতি কিংবা স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতি এই বাংলাদেশে আর হবে না, হতে দেয়া যাবেনা।

কিছু তরুন আর নিরীহ ভোটারদের অবুঝ ক্ষোভকে পুঁজি করে এই ভেজা বেড়ালরা যে ফন্দি-ফিকির করছে, এটিকে মুকুলেই বিনাশ করতে হবে। বিনাশ করতে হবে তথ্য দিয়ে, বিনাশ করতে হবে এই তরুনদের ইতিহাস ভিত্তিক পাঠ দিয়ে।

এই তরুনদের বুঝাতে হবে, জাতীয় ঐক্যের নামে কামাল কিংবা জামালরা তোমাদের ভুল বুঝাচ্ছে। ওরা ভালো মানুষির মুখ করে তোমাকে ছেড়ে দেবে একটি অসভ্য ড্রাগনের হাতে। যেখান থেকে তুমি হারিয়ে যাবে অন্ধকারের সবচেয়ে গহীন কিনারে।আর তোমার ফিরে আসবার কোনো উপায় থাকবে না।

আওয়ামী লীগে কারো আপত্তি থাকলে সেটিতে সমস্যা নেই। আওয়ামী লীগে আপত্তি থাকতেই পারে। গত পাঁচটি বছর ধরে যে মোটা দাগের গ্রিড লাইনগুলোতে আওয়ামী লীগ ছুরি চালিয়েছে সেটির পুরো ব্যাপারটি অত্যন্ত করুন। এটির ফলাফল এতটাই করুন যে, যে লোকের ভোট মাত্র তিনি নিজে আর তাঁর স্ত্রী, তাঁকেও এখন গুনতে হচ্ছে।

কিন্তু এই গ্রিড লাইনগুলো ট্র্যাকে ফেরত আনা সম্ভব। এও সম্ভব আওয়ামী লীগকে বাধ্য করা এবং এও সম্ভব শেখ হাসিনাকে বুঝিয়ে বলা ও বুঝাতে পারা। শেখ হাসিনার আমলে যে সমস্যাগুলো আমরা চিহ্নিত করে লাভবান হয়েছি সেটিকে রেক্টিফাই এই শেখ হাসিনাকে ঘিরেই সম্ভব। এটি আমরা খুব বিশ্বাস নিয়েই বলতে পারি।

কিন্তু জাতীয় ঐক্যের নাম করে একটি গামছা ভাঁড় আর একটি সংবিধান ম্যানিয়াক কিংবা পলিটিকাল পতিতাদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা বি এন পি জামাত জোট যদি এই জনপদে আরেকবার ঢুকে পড়ে তাহলে এই জাতির যেমন আর রক্ষে নেই, ঠিক একইভাবে এটিই হবে এই বাংলাদেশের প্রাথমিক গৃহযুদ্ধের প্রথম পাঠ।

তাই সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই দেশের অগণিত তরুনদের। কক্ষচ্যুত গ্রিড লাইন এই তরুনেরা নিজ হাতে ঠিক করবার দায়িত্ব নিবে নাকি গামছা আর সংবিধান ম্যানিয়াক অথর্বের আড়ালে একটা ড্রাগনের সাথে তারা যুদ্ধ করবে।

দৈনিক চাঁদপুর
দৈনিক চাঁদপুর