ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে ছয় শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ে চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের প্রায় দুই হাজার গাছ উপড়ে ভেঙে পড়েছে। এতে সদরের ১০০টি বাড়িঘর ও হাইমচরের পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 
রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বুলবুল তাণ্ডবটি চালায়। এছাড়া চাঁদপুর শহরসহ জেলার আট উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। 

জেলা সদরের বাগাদী ইউপির একাধিক বাসিন্দা জানান, চাঁদপুর সিআইপি বেড়িবাঁধের সড়কে, বিদ্যালয় ও ঘরবাড়িতে প্রায় শতাধিক গাছ উপড়ে ভেঙে পড়েছে। স্থানীয়রা এসব গাছ কেটে সড়ক থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।

হাইমচর প্রেস ক্লাবের সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, উপজেলার প্রায় সব গ্রামে প্রচুর পরিমাণে গাছ ভেঙে সড়ক ও ঘরবাড়ির উপরে পড়েছে। এতে পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ঝড়ের কবলে পড়ে অনেক পানের বোরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া হাইমচর ছোট লক্ষ্মীপুর গ্রামের আ. ছোবহান গাছের ডালের নিচে পড়ে আহত হয়েছেন।

হাইমচরের ইউএনও ফেরদৌসি বেগম বলেন, প্রচণ্ড বাতাসে হাইমচরের ছয়টি ইউপির মধ্যে হাওলাদার কান্দিতে ৩৮টিসহ চরাঞ্চলের ঈশানবালা, মনিরপুরচর, গাজীপুর, নীলকমল, মাঝির বাজার, সাহেবগঞ্জ, চরকোড়ালিয়া, মাঝেরচর ও নতুন চরে প্রায় পাঁচ শতাধিক কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া সড়কে বহু গাছ ভেঙে পড়ে। এসব গাছ তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়দের সহযোগিতায় চাঁদপুর ও হাইমচর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কেটে অপসারণ করছেন। 

এদিকে শহরের পুরান বাজারের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় আট থেকে ১০টি বড় গাছ উপড়ে পড়ে গেছে। শহরের কালিবাড়ীর গুয়াখোলা রোডে গাছের ডাল ভেঙে বিদ্যুৎ তারের উপরে পড়েছে। ফলে বিদ্যুৎ তার ছিঁড়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। 

রাজরাজেশ্বর ইউপির চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, সকাল থেকে ঝড়ের গতি কম ছিল। তবে বিকেল ৩ টার পর থেকে ঝড়ের গতি বেড়ে যায়। এতে মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে গোয়ালনগর ও বলিয়ার চরের বহু কাঁচা ও অস্থায়ী ঘর ভেঙে পড়েছে। এ সময় ঘরের টিনের চাল ও বেড়া উড়ে নদীতে গিয়ে পড়ে।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. শোয়েব বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবের কারণে চাঁদপুরে বাতাসের তীব্রতা বেড়েছে। তবে এখনো ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত রয়েছে।

চাঁদপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস.এম.ইকবাল বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পড়ে বহু গাছপালা বিদ্যুতের তারের উপর পড়েছে। এসব গাছ কেটে অপসারণ করা হচ্ছে। এছাড়া জাতীয় গ্রিডে মেরামতের কাজের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। লাইনগুলো সচল হলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হবে।

চাঁদপুরের ডিসি মো. মাজেদুর রমহান খান বলেন, হাইমচর উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। ইউএনওকে সরেজমিন দেখে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।