যত্রতত্র বর্জ্যের কারণে এ কি হলো ফরিদগঞ্জের
দৈনিক চাঁদপুর
প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
'গায়ে সুন্দর খালাত ভাই।' ঠিক এ রকমই ফরিদগঞ্জ শহরটি। উপজেলা প্রশাসন এবং পৌর প্রশাসন সেই সাথে ধনাঢ্য পৌরবাসী দামি গাড়ি ব্যবহার আর সুন্দর পোশাক পরলেও সুন্দর পরিবেশের দিকে কারোরই নজর নেই। এডিস মশা নিধন ও বংশ বিস্তার রোধকল্পে সারাদেশের ন্যায় ফরিদগঞ্জেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছিলো। তবে এটি ছিলো অনেকটা আনুষ্ঠানিকতার মতোই। বিভিন্ন অফিস এবং স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার আঙ্গিনা পরিস্কারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে এ কর্মসূচি। অথচ দীর্ঘদিন ধরে ফরিদগঞ্জ সদর বাজারের রাস্তার পাশে স্তূপকৃত ময়লাগুলো কারো নজরেই পড়লো না।
১৯ দশমিক ৭৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের পুরো পৌর এলাকা নিয়ে এ প্রতিবেদনটি নয়। এটি ছোট্ট ফরিদগঞ্জ সদর বাজারের বিষয় নিয়ে। এই ছোট্ট বাজারটুকু পরিচ্ছন্ন রাখতে পারছে না পৌর কর্তৃপক্ষ। তবে সবচেয়ে লজ্জাজনক বিষয় হচ্ছে, খোদ পৌর কর্তৃপক্ষই যত্রতত্র ময়লা ফেলেছেন। পৌরবাসী বলছে, ইচ্ছে করলেই পৌর কর্তৃপক্ষের দ্বারা সম্ভব বাজার এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। তবে সে জন্য দরকার একটু সদিচ্ছা। বাজারের দোকানদার থেকে শুরু করে বাসা-বাড়ি ও অফিসের উচ্ছিষ্ট (অপ্রয়োজনীয় জিনিস) অংশ যে যেখানে ইচ্ছে সেখানে ফেলছে। এর অন্যতম কারণ হলো, বাজারের কোথাও ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। আরেকটি কারণ, মানুষ সচেতন না হওয়া। ফলে ফরিদগঞ্জ সদর বাজারের রাস্তার পাশেসহ সর্বত্রই ময়লার স্তূপ পড়ে থাকতে দেখা যায় সবসময়।
পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লা ফেলার জন্যে নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে না দেয়ায় অঘোষিতভাবে পৌরবাসী কয়েকটি স্থান নির্ধারণ করে সেখানে নিয়মিত ময়লা ও বর্জ্য ফেলছে। বিশেষ করে কেরোয়া ব্রিজ সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীতে মধ্য বাজারের সিংহভাগ এলাকায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে নদীর অধিকাংশ জায়গা ইতোমধ্যে ভরাট হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন এবং পৌর কর্তৃপক্ষের যেনো মাথা ব্যথা নেই। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ডাকাতিয়া নদীর ফরিদগঞ্জ বাজারের অংশ ভরাট হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। একদিকে যেমন ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ সহ্য করে এখানকার দোকানদারদের ব্যবসা করতে হচ্ছে, অন্যদিকে অসহ্য দুর্গন্ধ মাড়িয়ে পথচারীদের এ পথ অতিক্রম করতে হচ্ছে। অনেককেই দেখা যায় নাকে কাপড় দিয়ে অথবা কিছুক্ষণের জন্যে দম বন্ধ করে ব্রিজ পার হতে। এ পথ অতিক্রমে বিদ্যালয়গামী ছোট ছোট বাচ্চাদের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কিন্তু হতাশার বিষয় হচ্ছে, যেখানে পৌর ও বাজার কর্তৃপক্ষ নদী দূষণ ও ভরাট থেকে নদী রক্ষা করবে, উল্টো সেখানে তারাই নদী ভরাট ও দূষণ করছে। ব্রিজের আশপাশের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, পৌর ও বাজার কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করার পরেও তারা এখানে ময়লা ফেলছে । মারাত্মক দুর্গন্ধের কারণে এখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ডাকবাংলো সংলগ্ন নদীর ঘাট এলাকাতেও লোকজন তাদের খেয়াল খুশিমতো প্রতিদিন দোকান এবং বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলছে। অথচ দিনের কাজের ক্লান্তি দূর করে একটু প্রশান্তির জন্যে লোকজন বিকেল বেলায় এখানে ছুটে আসে। অবসাদ দূর করতে অবসর সময় কাটানোর জন্যে এ অঞ্চলের মানুষের ঘুরার জায়গা নেই বললেই চলে। 'নাই মামার চেয়ে কানা মামা'র মতো অবস্থা ফরিদগঞ্জ ডাকবাংলো এলাকা। বাধ্য হয়ে অবকাশ যাপনের জন্যে এখানে এসে তাদের ময়লা আবর্জনার কাছেই বসতে হয়।
ময়লা-আবর্জনা ফেলার আরেকটি অনির্ধারিত স্থান ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাজারমুখী লিংক রোডের পাশে। ময়লা ফেলার পাশাপাশি এখানকার পথচারী এবং দোকানদাররা এ স্থানটিকে প্রস্রাবের স্থানে পরিণত করেছে। প্রস্রাবের দুর্গন্ধে এখান দিয়ে হাঁটাচলা করা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে আদর্শ একাডেমি ও মহিলা মাদ্রাসার প্রবেশ পথে ময়লার বিশাল স্তূপ রয়েছে। এছাড়াও রূপসা রাস্তার মোড়ে উপজেলা মৎস্য অফিসের পাশেও ময়লা ফেলা হচ্ছে। এ রাস্তা দিয়ে দুর্গন্ধে হাঁটাচলা করা কষ্টকর। এভাবেই ফরিদগঞ্জের পরিবেশ প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় আবর্জনার দুর্গন্ধ সহ্য করে। এছাড়া লোকচক্ষুর আড়ালেও যে যেখানে পারছে সেখানে বাসা বাড়ির ময়লা ফেলছে। এ রকম কয়েকটি স্থান হলো পশ্চিম বাজারের ডাকাতিয়া নদীর পাশে উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্মশান ঘাট এলাকা, ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে ও ফরিদগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথামিক বিদ্যালয়ের পাশে।
দূষিত এ ময়লা-আবর্জনা থেকে নির্গত গ্যাস থেকে কী ধরনের রোগজীবানু ছড়াতে পারে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম শিপনের কাছে। তিনি বলেন, 'ময়লা-আবর্জনা পঁচে সেখানে জন্ম নেয় মাছি। মাছি মানুষের খাবারে বসে। এতে ডায়রিয়া, টাইফয়েডসহ পানিবাহিত নানান রোগ এবং শিশুদের অনেক রোগ হতে পারে।'
ডাকবাংলোয় বিকেল বেলায় ঘুরতে আসা শামিম বলেন, 'পৌর কর্তৃপক্ষের ময়লা আবর্জনা ফেলার স্থান না থাকায় লোকজন বিভিন্ন খোলা স্থানে ময়লা আর্বজনা ফেলছে। এর জন্যে একদিকে ভয়াবহ নদী দূষণ হচ্ছে আর নদীও ভরাট হয়ে যাচ্ছে।'
ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী বাঁধন কুমার শীল বলেন, 'ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে এ পথ দিয়ে চলা কষ্টকর।'
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শওকত আলী বলেন, 'এটা আমাদের মহা-সমস্যা। আমার স্টাফদের অফিসে আসতে সমস্যায় পড়তে হয়। দুপুরে অফিসে খেতে পারি না। দুর্গন্ধে অনেকের বমি আসে। সমস্যার প্রতিকার চেয়ে আমি উপজেলা প্রশাসন এবং পৌরসভাকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।'
এ বিষয়ে উপজেলা বন ও পরিবেশ কর্মকর্তা মোঃ কাউছার আহমেদ জানান, 'ফরিদগঞ্জের যত্রতত্রে ময়লা আবর্জনা, যা খুবই দুঃখজনক। মাসিক সমন্বয় সভায় আমি মেয়র সাহেবকে বিভিন্ন স্থানে ময়লা ফেলার জন্যে কিছু ড্রাম রাখার প্রস্তাব দিয়েছি।'
এ ব্যাপারে পৌর প্যানেল মেয়র মোঃ মোহাম্মদ হোসেন বলেন, 'যেখানে সেখানে ময়লা ফেলাতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে ঠিক, কিন্তু আমরা কী করবো? মাসিক সমন্বয় সভায় এ বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি, কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো স্থান না পাওয়াতে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।'
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মমতা আফরিন বলেন, 'যাদরে মধ্যে নূ্যনতম বিবেক রয়েছে তাদের দ্বারা এই কাজগুলো সম্ভব নয়। আমাদের শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। মূলত কাজটা পৌরসভার। আমি দেখছি কী করা যায়।'
- মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা
- মদ খেয়ে নারী নিয়ে হোটেলে নোবেল, গভীর রাতে চেঁচামেচি
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকাডুবির ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ৫
- দেশের অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নকে বাঁচিয়ে রাখতে শেখ হাসিনার পাশে থাকতে
- ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ক্রোয়েশিয়া
- দেশে করোনায় ৮২ পুলিশ সদস্যের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৮ হাজার
- মোংলা বন্দরের নতুন চ্যানেল নির্মাণ সম্পন্ন
- আয়কর দিতে হবে ৩০ তারিখের মধ্যে
- গ্রামীণ বিদ্যুৎ সুবিধা উন্নয়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
- দেশের নানা আয়োজনে ১৭-২৬ মার্চ যোগ দেবেন বিশ্ব নেতারা
- স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা
- কর্মস্থল ত্যাগকারীদের তালিকা চায় মন্ত্রণালয়
- ‘মধ্যবিত্তদেরও খাদ্য সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে’
- আজ থেকে চালু হচ্ছে মালবাহী ট্রেন
- চালু হলো দেশের প্রথম বেসরকারি আরটি পিসিআর ল্যাব
- করোনার আতঙ্কেও এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ
- উৎপাদন বৃদ্ধিতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার
- করোনাকালে চূড়ান্ত এমপিওভুক্তির সুখবর পেল ১৬৩৩ স্কুল-কলেজ
- হাওরে প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার শ্রমিক ধান কাটছেন: কৃষিমন্ত্রী
- ময়মনসিংহে করোনা রোগীদের জন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫টি অ্যাম্বুলেন্স
- করোনা মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুর স্বাস্থ্যসেবা দর্শন
- বৈশ্বিক ক্রয়াদেশ পূরণে সক্ষম বাংলাদেশ ॥ শেখ হাসিনা
- মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে মানুষ, দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে
- করোনা পরীক্ষা হবে চার বেসরকারি হাসপাতালে
- ২০ হাজারের বেশি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত রয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- সুখবর আসছে ব্যাংক সুদে
- গুগল ম্যাপের বিকল্প আনলো হুয়াওয়ে
- অভিনেতা ইরফান খান মারা গেছেন
- ঘরে থাকা সাত জিনিস ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর
- ফ্রিজে ২৮ দিন বাঁচে সার্স-কভ ভাইরাস! জীবাণুমুক্ত করার উপায়